ক্ষুধার্ত ২৪ লাখ ফিলিস্তিনির জন্য মাত্র ৯টি ত্রাণবাহী ট্রাক প্রবেশের অনুমতি দিয়েছে ইসরাইল। সোমবার ইসরাইলি গণমাধ্যমের বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে তুর্কি বার্তা সংস্থা আনাদোলু। ইসরাইলি সেনাবাহিনীর আঞ্চলিক সরকারি কার্যক্রমের সমন্বয় শাখা সিওজিএটি কার্যালয়ের প্রধান ঘাসান আলিয়ান ‘আর্মি রেডিও’কে বলেন, ‘শিশুখাদ্যসহ মানবিক সহায়তা বহনকারী ৯টি ট্রাক আগামী কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ইসরাইল হয়ে গাজায় প্রবেশ করবে’।

ইসরাইলি আর্মি রেডিও আরও জানায়, এই ত্রাণ ট্রাকগুলো আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর গুদামে পৌঁছাবে এবং সেখান থেকে তা ফিলিস্তিনিদের মধ্যে বিতরণ করা হবে।

গাজার সরকারি, মানবাধিকার ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর রিপোর্ট অনুযায়ী, ইসরাইল গত ২ মার্চ থেকে গাজার সব প্রবেশপথ বন্ধ রেখেছে। যার ফলে গাজায় চলমান মানবিক সংকট আরও ভয়াবহ রূপ নিয়েছে।

বিশ্বব্যাংকের তথ্যানুযায়ী, গাজার প্রায় ২৪ লাখ মানুষই এখন সম্পূর্ণভাবে মানবিক সহায়তার ওপর নির্ভরশীল।

এমন পরিস্থিতিতে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর কার্যালয় রোববার জানায়, ‘দুর্ভিক্ষ প্রতিরোধে’ গাজাবাসীর জন্য ‘একটি মৌলিক পরিমাণ খাদ্য’ ঢুকতে দেওয়া হবে।

নেতানিয়াহু বলেন, যদি দুর্ভিক্ষ শুরু হয়, তাহলে তা ‘অপারেশন গিডিয়নের রথ’ (ইসরাইলের গাজায় নতুন স্থল অভিযানের একটি ধাপ) চালিয়ে যাওয়া ঝুঁকির মুখে পড়তে পারে।

ইসরাইলের রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার মাধ্যম কেএএন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তার সূত্রে জানায়, এই উদ্যোগটি অস্থায়ী এবং প্রায় এক সপ্তাহ স্থায়ী হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। যতক্ষণ না ইসরাইলি সেনা তত্ত্বাবধানে এবং মার্কিন নিরাপত্তা ঠিকাদারদের পরিচালনায় মূলত দক্ষিণ গাজায় ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্র স্থাপন সম্পন্ন হয়।

দখলদার ইসরাইল ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় যে সহিংস অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে, তাতে এখন পর্যন্ত ৫৩,৩০০-র বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু।

গত বছরের নভেম্বরে আন্তর্জাতিক ফৌজদারি আদালত (আইসিসি) গাজায় যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে নেতানিয়াহু এবং সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে।

এছাড়াও গাজায় চালানো যুদ্ধের কারণে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) গণহত্যার অভিযোগে ইসরাইলের বিরুদ্ধে একটি মামলা চলছে।