ডেস্ক নিউজ:
মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট ক্লাউডিয়া শেইনবাম গতকাল শনিবার জনসম্মুখে প্রকাশ করেছেন যে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের সাথে তার গত মাসের এক ফোনালাপে ড্রাগ পাচার মোকাবেলায় মেক্সিকো সীমান্তে মার্কিন সৈন্য মোতায়েনে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পর প্রস্তাব তাৎক্ষণিকভাবে তিনি প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। তিনি জানান যে, ওই ফোনালাপে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে মুখের উপর তিনি বলে দিয়েছিলেন যে, “সার্বভৌমত্ব বিক্রয়ের জন্য নয়।”
দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নালে গত শুক্রবার প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে উল্লেখ করে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প মেক্সিকোতে মাদক চক্র দমনে যুক্তরাষ্ট্রের আরও সম্পৃক্ততা নিশ্চিত করতে মেক্সিকোকে চাপ দিচ্ছিলেন। এই প্রতিবেদনের জবাবে মেক্সিকো প্রেসিডেন্ট ক্লাউডিয়া শেইনবাম গতকাল শনিবার পূর্ব মেক্সিকোতে তার সমর্থকদের সামনে গত মাসে ট্রাম্পের সঙ্গে হওয়া উক্ত উত্তেজনাপূর্ণ ফোনালাপের বর্ণনা দেন। শেইনবাম বলেন, “তিনি (ট্রাম্প) বললেন, ‘আমরা কীভাবে আপনাকে মাদক পাচার মোকাবেলায় সাহায্য করতে পারি? আমি প্রস্তাব দিচ্ছি যে যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনী এসে আপনাদের সহায়তা করুক।’ আর জানেন আমি কী বললাম? ‘না, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। সার্বভৌমত্ব বিক্রয়ের বস্তু নয়। সার্বভৌমত্ব ভালোবাসা যায় এবং তা রক্ষা করা হয়।”
ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল জানায়, গত ১৬ এপ্রিল অনুষ্ঠিত ৪৫ মিনিটের ঐ ফোনালাপে ট্রাম্প শুধু সেনা পাঠানোর প্রস্তাবই দেননি, বরং মাদকচক্র দমনে যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্ব দেবে এমন দাবিও জানান। শেইনবাম জবাবে বলেন, তার সরকার গোয়েন্দা তথ্য ভাগাভাগিতে সহযোগিতা করবে, তবে সরাসরি কোনো সামরিক উপস্থিতি মেনে নেবে না। স্মরণ করা যেতে পারে, ট্রাম্প ইতিপূর্বে বলেছিলেন, মেক্সিকো যদি মাদকচক্র ধ্বংসে ব্যর্থ হয়, তাহলে তিনি একতরফা পদক্ষেপ নেবেন। ফোনালাপের পর ফক্স নিউজকে ট্রাম্প বলেছিলেন, “মেক্সিকো চরমভাবে মাদকচক্রকে ভয় পায়। আমরা তাকে সাহায্য করতে চাই। আমরা মেক্সিকোকে সাহায্য করতে চাই, কারণ এমনভাবে একটি দেশ চালানো যায় না। এটা সম্ভব না।” ফোনালাপের ফলাফল সম্পর্কে হোয়াইট হাউস মুখপাত্র তখন বলেছিলেন, যদিও আলোচনা ফলপ্রসূ হয়েছে, “তবুও মেক্সিকোকে আমেরিকানদের সুরক্ষার জন্য আরো বেশি কিছু করতে হবে, বিশেষত বিপজ্জনক বিদেশি সন্ত্রাসী সংগঠন এবং তারা যে মাদক ও সহিংসতা উভয় দিকের সম্প্রদায়ে ছড়িয়ে দিচ্ছে, তা রোধে।”
উল্লেখ্য, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তার প্রেসিডেন্সির শুরু থেকেই দক্ষিণ সীমান্তে সামরিক উপস্থিতি বৃদ্ধি করেছেন, যা অন্যান্য সরকারি সংস্থাগুলোকে অভিবাসন নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করছে। গত মাসে প্রকাশিত একটি প্রেসিডেনশিয়াল মেমোরেন্ডামে ট্রাম্প একটি পরিকল্পনা উপস্থাপন করেন, যা থেকে জানা যায় মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় সীমান্তের পাশে অবস্থিত একটি সরকারি জমি 'রুজভেল্ট রিজার্ভেশন' এর ওপর অধিকার প্রতিষ্ঠা করেছে। এর মাধ্যমে সীমান্ত প্রাচীর নির্মাণ এবং নজরদারি যন্ত্রপাতি স্থাপনের মতো সামরিক কার্যক্রম চালানো সহজ হবে।
তবে ইমিগ্রেশন ও বাণিজ্য ইস্যুতে শেইনবাম ট্রাম্পের সঙ্গে সহযোগিতা করেছেন। ফেব্রুয়ারিতে ট্রাম্প মেক্সিকোর জন্য তার শুল্ক আরোপ স্থগিত করেন। বিনিময়ে মেক্সিকো ১০,০০০ ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েন করে সীমান্তে। কিন্তু, গতকাল শেইনবাম স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে, মেক্সিকোর সীমান্ত পর্যন্ত মার্কিন সেনাবাহিনীর উপস্থিতিই তার সীমারেখা। তিনি বলেন, “আমরা একসঙ্গে কাজ করতে পারি, কিন্তু আপনি আপনার ভূখণ্ডে, আর আমরা আমাদের ভূখণ্ডে।”
ফজর | ০৪:৫৪-০৬:০৮ মিনিট ভোর |
---|---|
যোহর | ১২:০৯-০৪:২৫ মিনিট দুপুর |
আছর | ০৪:২৬-০৬:০৬ মিনিট বিকাল |
মাগরিব | ০৬:১০-০৭:২১ মিনিট সন্ধ্যা |
এশা | ০৭:২২-০৮:৪৯ মিনিট রাত |
জুম্মা | ১.৩০ মিনিট দুপুর |