ডেস্ক নিউজ:
আসন্ন কোরবানির ঈদে পশুর চামড়ার ন্যায্যমূল্য নিশ্চিতে উচ্চপর্যায়ের কমিটি গঠন নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার ঘোষণায় স্বস্তি ফিরছে মাঠ পর্যায়ের ব্যবসায়ীদের। কারসাজি এড়িয়ে সরকার নির্ধারিত দামে ট্যানারি মালিকরা চামড়া কিনলে এবার রেকর্ড পরিমাণ চামড়া সংরক্ষণের আশা তাদের। একইসঙ্গে ট্যানারি মালিকদের কাছে থাকা বকেয়া পাওনা পরিশোধের পাশাপাশি ঋণ সুবিধার কথা বলছেন আড়তদাররা।
২০২১ সালে কোরবানির পশুর চামড়া সংগ্রহের ক্ষেত্রে বড় ধরনের বিপর্যয়ের কবলে পড়েছিলেন চট্টগ্রামের ব্যবসায়ীরা। ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করে বিক্রি করতে না পেরে রাস্তায় নষ্ট হয়েছিল হাজার হাজার পিস পশুর চামড়া। এমনকি গত বছরেও কিছু চামড়া নষ্ট হয়েছিল। এ অবস্থায় চলতি বছর চামড়ার ন্যায্যমূল্য নিশ্চিতে কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এতে স্বস্তি ফিরেছে মাঠ পর্যায়ের ব্যবসায়ীদের মাঝে।
চট্টগ্রাম কাঁচা চামড়া আড়তদার সমিতির সাবেক সভাপতি মোহাম্মদ মুসলিম বলেন, সরকার নির্ধারিত দাম অনুযায়ী চামড়া কিনে অতিদ্রুত আড়তে নিয়ে আসতে হবে মৌসুমি ব্যবসায়ী ও ফড়িয়াদের। দেরি হলে চামড়া নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
সাধারণ চামড়া ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, প্রতি বছর সরকার কোরবানির আগে দর নির্ধারণ করে দিলেও ট্যানারি মালিকরা তা নিয়ে কারসাজি করতেন। এমনকি মাঠ পর্যায় থেকে বাকিতে চামড়া কিনে বছরের পর বছর সেই পাওনা টাকা পরিশোধ করা হয় না।
গত বছরের বিক্রিত চামড়ার দর এখনও পরিশোধ হয়নি বলে দাবি তাদের। মাঠ পর্যায়ের ব্যবসায়ী কিংবা আড়তদাররা চামড়া কিনতে ব্যাংক ঋণ না পেলেও ট্যানারি মালিকরা এই সুবিধা ভোগ করে আসছেন।
চট্টগ্রাম কাঁচা চামড়া আড়তদার সমিতির আহ্বায়ক কমিটির উপদেষ্টা মাহবুবুল আলম বলেন, সরকার নির্ধারিত দামে চামড়া কেনে না ট্যানারি মালিকরা। আরও কম দাম দেয়। লসে বিক্রি করেও বেশিরভাগ সময় টাকা সময়মতো পাওয়া যায় না।
চট্টগ্রাম কাঁচা চামড়া আড়তদার সমিতির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য আবুল কাশেম বলেন, সরকার নির্ধারিত দাম অনুযায়ী যাতে চামড়া বিক্রি করা যায়, সেটি সরকারকে নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি টাকা বকেয়া রাখতে পারবে না ট্যানারিগুলো। পরিশোধ করতে হবে সময়মতো।
তবে এবারের কোরবানি গ্রীষ্ম মৌসুমে হওয়ায় তীব্র গরমে চামড়া নষ্ট হওয়ার শঙ্কা রয়েছে। এ অবস্থায় বেশি দর পাওয়ার আশায় দীর্ঘক্ষণ চামড়া ফেলে না রেখে সংরক্ষণের ব্যবস্থার পরামর্শ আড়তদারদের।
চট্টগ্রাম কাঁচা চামড়া আড়তদার সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক খোরশেদ আলম বলেন, পাড়া মহল্লার মৌসুমি ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা দরে চামড়া কেনার পর লবণ দেয়া থেকে শুরু করে শ্রমিক খরচ মিলিয়ে প্রতি পিস চামড়ায় বাড়তি ২০০ টাকা খরচ করেন আড়তদাররা। আর এই চামড়া পরবর্তীতে বিক্রি হয় প্রতি বর্গফুট ৪০ থেকে ৪৫ টাকা দরে।
তিনি আরও বলেন, তবে মৌসুমি ব্যবসায়ীরা চামড়ার দাম ধরে বসে থাকে, বিক্রি করে না সহজে। তারা শ্রমিক খরচ, লবণের খরচটা হিসাব করে না। এতে সময়ক্ষেপণে নষ্ট হতে থাকে চামড়া। এবার গরমের মৌসুম হওয়ায় দাম ধরে বসে না থেকে দ্রুত বিক্রি করে দেয়ার অনুরোধ থাকবে।
চট্টগ্রাম নগরীর মুরাদপুর হয়ে আতুরার ডিপো এলাকায় ছোট-বড় আড়াইশ আড়ত রয়েছে। যেখানে কোরবানির অন্তত ৩ লাখ পশুর চামড়া সংরক্ষণের সক্ষমতা রয়েছে। ১৫ দিন পর্যন্ত লবণ দিয়ে সংরক্ষণের পর সেই চামড়া ঢাকার ট্যানারি মালিকদের কাছে পাঠানো হয়।
প্রতিবছরই কোরবানির ঈদে চট্টগ্রামের আড়তদাররা সাড়ে ৩ থেকে ৪ লাখ পশু চামড়া সংগ্রহ করে থাকে। তবে এবার ন্যায্য দাম পেলে চামড়া সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ৫ লাখ ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা সংশ্লিষ্টদের।
ফজর | ০৪:৫৪-০৬:০৮ মিনিট ভোর |
---|---|
যোহর | ১২:০৯-০৪:২৫ মিনিট দুপুর |
আছর | ০৪:২৬-০৬:০৬ মিনিট বিকাল |
মাগরিব | ০৬:১০-০৭:২১ মিনিট সন্ধ্যা |
এশা | ০৭:২২-০৮:৪৯ মিনিট রাত |
জুম্মা | ১.৩০ মিনিট দুপুর |